Wednesday , April 24 2024

কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা, পর্ব-১

খাস জমি বন্দোবস্ত  দেয়ার ক্ষেত্রে যে পরিবারগুলিকে ভূমিহীন পরিবার হিসাবে গণ্য করা হবে সেগুলি হলোঃ

  • যে পরিবারের বসতবাটি এবং কৃষি জমি কিছুই নাই কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর।
  • যে পরিবারের বসতবাটি আছে কিন্তু কৃষি জমি নাই অথচ কৃষি নির্ভর।
  • যে পরিবারের বসতবাটি এবং কৃষি জমি উভয়ই আছে কিন্তু মোট জমির পরিমাণ ০.৫০ একরের কম, অথচ কৃষি নির্ভর।

কৃষি নির্ভর পরিবার বলতে এক বা একাধিক সদস্য কৃষি শ্রমিক হিসাবে বর্তমানে অন্যের জমিতে নিয়োজিত আছে কিংবা বর্গাচাষ করে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনাধীন কৃষি ও অকৃষি এই দুই প্রকারের সরকারী খাসজমি আছে। অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত সংক্রান্ত একটি নীতিমালা বিগত ৮ ই মার্চ ১৯৯৫ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট এর মাধ্যমে জারী করা হয়েছে। বর্তমানে এই নীতিমালা অনুযায়ী অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। অপরদিকে দেশের প্রতিটি জেলায়ই কম বেশী কৃষি খাসজমি রয়েছে। ১৯৭২ সাল হতেই সরকারের ভূমি সংস্কার কর্মসূচী অনুযায়ী কৃষি খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে আসছিল।

ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বিতরণের বিষয়ে সর্বশেষ ১৯৮৭ সালের ১লা জুলাই তারিখে একটি নীতিমালা জারী করা হয়েছিল। এই নীতিমালায় কৃষি খাসজমি কেবল ভূমিহীনদের মধ্যেই বিতরণের বিধান রাখা হয়। এই নীতিমালার আওতায় ভূমিহীনদের মধ্যেই কৃষি খাসজমি বিতরণের কার্যক্রম বহুপূর্বেই সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ইহা একটি ব্যাপক ও জটিল কার্যক্রম বিধায় সরকার ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টন কর্মসূচী অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে উহার সময়সীমা বৃদ্ধি করেন। তবে, খাসজমি বন্টনের ক্ষেত্রে অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে কৃষি খাসজমি বন্টনের ফলে সর্বত্রই বন্দোবস্তযোগ্য জমির পরিমাণ কমে গেছে। অপরদিকে জনসংখ্যা ক্রমবৃদ্ধির ফলে ভূমিহীনদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য ভূমিহীনদের সংখ্যার তুলনায় বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাসজমির অপ্রতুলতা তীব্রভাবে অনুভূত হয়।  এর ফলে খাসজমি বন্টনের ক্ষেত্রে নানা প্রকার জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে বলে সারাদেশ হতে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া যায়। তাই প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাসজমি সুষমভাবে এবং অধিক সংখ্যক ব্যক্তি/পরিবারকে জমি প্রদানের লক্ষ্যে একটি সুষ্ঠু ও গণমুখী নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। সেই কারণে বর্তমান সরকার বিগত ১৩-০৮-১৯৯৬ তারিখে জারীকৃত এক আদেশের মাধ্যমে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টন স্থগিত রাখেন।

সময়ের বিবর্তনে এবং জনসাধারণের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাস জমি বন্টনের একটি সুষ্ঠু ও গণমুখী নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এই নীতিমালার আওতায় রাংগামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি- এই তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যতীত বাকী ৬১টি জেলার বন্দোবস্তযোগ্য সকল কৃষি খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্টন করতে হবে।

(ক) এই নীতিমালা জারীর তারিখ হতে কার্যকর হবে।

(খ) এই নীতিমালা জারীর পর হইতে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টন সংক্রান্ত ইতিপূর্বে জারীকৃত সকল আদেশ, পরিপত্র, স্মারক, নীতিমালার কার্যকারিতা বাতিল হয়েছে বলে গণ্য হবে।

(গ) এই নীতিমালা জারীর পূর্বে প্রচলিত নিয়মনীতি মোতাবেক খাস কৃষি জমির যে সকল বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে, ঐ সকল বন্দোবস্ত বহাল থাকবে। তাছাড়া পূর্বের নীতিমালার আওতায় যে সকল বন্দোবস্ত কেইস জেলা প্রশাসক কর্তৃক ১৩-৮-৯৬ইং তারিখের পূর্বে চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে কিন্তু কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করা হয় নাই; সে সকল কেইসও বহাল থাকবে এবং কবুলিয়ত সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে।

তবে, ১৯৭২ইং তারিখের পর বিধি বর্হির্ভূতভাবে যদি কোনো কৃষককে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া থাকে তাহলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণের ভিত্তিতে থানা কমিটি জেলা কমিটির নিকট বন্দোবস্ত বাতিলের সুপারিশ করতে পারবে এবং জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত গণ্য হবে।

Check Also

আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতির জন্য দেওয়ানী কার্যবিধির ভাষ্য

দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা-১৪ (আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতি)

আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতির জন্য দেওয়ানী কার্যবিধির ভাষ্য

দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা-১৩ (আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতি)