দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮
বার কাউন্সিল পরীক্ষার প্রস্তুতি
গাইডলাইনঃ সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, যারা লাইভ কাউন্সিলিং এর আওতায় রয়েছেন তাদেরকে Bar Council Exam Preparation সংক্রান্ত সকল আপডেট মোবাইল SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে।
ধারার ইংরেজী ভার্সনঃ
Section 15. Court in which suits to be instituted:
Every suit shall be instituted in the Court of the lowest grade competent to try it.
Every suit shall be instituted in the Court of the lowest grade competent to try it.
ধারার বাংলা ভার্সনঃ
ধারা ১৫। যে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করিতে হইবেঃ
প্রত্যেক মোকদ্দমা বিচার করিবার উপযুক্ত সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালতে দায়ের করিতে হইবে।
প্রত্যেক মোকদ্দমা বিচার করিবার উপযুক্ত সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালতে দায়ের করিতে হইবে।
বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা
ধারা ১৫ দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের একটি খুব ছোট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধান, যা ‘যে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করিতে হইবে’ এই নীতি নিয়ে আলোচনা করে। এর মূল কথা হলো, যেকোনো দেওয়ানি মোকদ্দমা বিচার করার জন্য উপযুক্ত, কিন্তু নিম্নতম পর্যায়ের আদালতে দায়ের করতে হবে।ধারাটির মূল অংশটি হলোঃ
“প্রত্যেক মোকদ্দমা বিচার করিবার উপযুক্ত সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালতে দায়ের করিতে হইবে।”
চলুন, এটাকে সহজ করে বুঝিঃ
“প্রত্যেক মোকদ্দমা”: বলতে বোঝানো হচ্ছে সকল প্রকার দেওয়ানি মোকদ্দমা।
“বিচার করিবার উপযুক্ত”: এর মানে হলো, যে আদালতের সেই মোকদ্দমাটি বিচার করার ক্ষমতা বা এখতিয়ার (Jurisdiction) রয়েছে। এই এখতিয়ার আর্থিক (Pecuniary), আঞ্চলিক (Territorial) এবং বিষয়বস্তুগত (Subject-matter) হতে পারে। অর্থাৎ, আদালতকে অবশ্যই মোকদ্দমার আর্থিক মূল্য, মোকদ্দমার বিষয়বস্তু এবং যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকার এখতিয়ারের মধ্যে থাকতে হবে।
“সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালতে দায়ের করিতে হইবে”: এটিই এই ধারার মূল নির্দেশ। এর মানে হলো, যদি একটি মোকদ্দমা বিচার করার ক্ষমতা একাধিক আদালতের থাকে (যেমনঃ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এবং জেলা জজ আদালত), তাহলে মোকদ্দমাটি সেই আদালতে দায়ের করতে হবে যার ক্ষমতা সবচেয়ে কম বা যা সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালত।
একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝুনঃ
ধরুন, আপনি একটি দেওয়ানি মোকদ্দমা করতে চান যার বিষয়বস্তুর আর্থিক মূল্য ৫ লক্ষ টাকা। মনে করুন, বাংলাদেশে একটি ‘সহকারী জজ আদালত’-এর আর্থিক এখতিয়ার ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং একটি ‘সিনিয়র সহকারী জজ আদালত’-এর আর্থিক এখতিয়ার ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আবার, একটি ‘যুগ্ম জেলা জজ আদালত’-এর আর্থিক এখতিয়ার অসীম। আপনার ৫ লক্ষ টাকার মোকদ্দমাটি এই তিনটি আদালতেরই বিচার করার ক্ষমতা আছে (কারণ ৫ লক্ষ টাকা তাদের প্রত্যেকের আর্থিক এখতিয়ারের সীমার মধ্যে পড়ে)। কিন্তু ধারা ১৫ অনুযায়ী, আপনাকে মোকদ্দমাটি সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালত, অর্থাৎ সহকারী জজ আদালতে দায়ের করতে হবে, কারণ এই আদালতটিই ৫ লক্ষ টাকার মোকদ্দমা বিচার করার জন্য উপযুক্ত এবং একইসাথে এটি ‘সর্বনিম্ন পর্যায়ের আদালত’ যা এই এখতিয়ার রাখে। আপনি সরাসরি সিনিয়র সহকারী জজ বা যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এই মোকদ্দমা দায়ের করতে পারবেন না, যদিও তাদের আরও বেশি এখতিয়ার আছে।
কেন এই ধারাটি গুরুত্বপূর্ণ?
আদালতের কাজের সুষম বন্টন (Proper Distribution of Work): এই ধারাটি উচ্চতর আদালতগুলোর ওপর মোকদ্দমার চাপ কমায়। যদি ছোট ছোট মোকদ্দমাগুলোও উচ্চ আদালতে দায়ের করা হয়, তাহলে উচ্চ আদালতগুলো বড় ও জটিল মোকদ্দমাগুলো নিষ্পত্তিতে বেশি সময় দিতে পারবে না।
সময় ও খরচ বাঁচানোঃ সাধারণত, নিম্ন আদালতগুলোতে মোকদ্দমা নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া কিছুটা দ্রুত হতে পারে এবং ব্যয়ও তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে।
বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধিঃ এটি সামগ্রিকভাবে বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
অপব্যবহার রোধঃ এটি নিশ্চিত করে যে, বিচারপ্রার্থীরা অযাচিতভাবে তাদের পছন্দের আদালতে মোকদ্দমা করে আদালতের ক্রম বা এখতিয়ারের অপব্যবহার করবে না।
সংক্ষেপে, ধারা ১৫ হলো একটি নির্দেশমূলক বিধান। এটি বলে যে, একটি দেওয়ানি মোকদ্দমা সেই আদালতে দায়ের করতে হবে যার সেটি বিচার করার এখতিয়ার আছে এবং একইসাথে সেটি সকল আদালতের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরের আদালত।
This content is locked
লক্ষ্য করুনঃ আইনের শিক্ষার্থীরা এবং সাধারণ পাঠকরা প্রায়ই The Code of Civil Procedure, 1908-কে বিভিন্নভাবে যেমনঃ CPC 1908, Code of Civil Procedure 1908, The Civil Procedure Code 1908, অথবা Civil Procedure Code 1908 নামে খোঁজেন। এই ভিন্ন নামগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে খোঁজার সময় ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো সম্ভব। এছাড়াও, অনেকে Laws of Bangladesh ওয়েসাইটে প্রবেশ করে এই আইনটি খোঁজ করেন।