Friday , April 19 2024

খাস জমি সংক্রান্ত অধিকার লংঘন ও প্রতিকার

কোন জমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয়, তাহলে সেই জমি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে উক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি বলে। ১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৭৬ ধারার ১ উপধারায় খাস জমি সম্বন্ধে বলা হয়েছে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ভূমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে তাহলে সরকার, এই ভূমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন, অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন উপরোক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি হিসাবে বুঝাবে। তবে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের যথা বন বা পূর্ত কিংবা সড়ক ও জনপথ এর স্বত্বাধীন বা মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমিকে সরকারের খাস জমি হিসাবে গন্য করা যাবে না।

অধিকারঃ ১৯৯৫ সালের খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা এবং ১৯৯৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত খাস জমি সংক্রান্ত সংশোধিত গেজেট মতে-

  • কোনো জমি গুলি খাস জমি তা জানার অধিকার।
  • ভূমিহীন ব্যক্তি হলে খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।
  • ভুলক্রমে কোনো ব্যক্তির জমি খাস জমি হিসেবে গণ্য হলে কিংবা কোন ভূমিহীন ব্যক্তিকে বন্দোবস্ত দিলে তা বাতিল করার অধিকার।
  • খাস জমি সংক্রান্ত কোন আপত্তি থাকলে আপিলের অধিকার।
  • ভূমিহীনরা খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার জন্য দরখাস্ত দাখিলের জন্য সময় পাবার অধিকার।
  • জেলা প্রশাসক কর্তৃক খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর ১ কপি পূনর্বাসন কার্ড পাবার অধিকার।
  • যদি কোন ভূমিহীন সমিতি থাকে তাহলে ভুমিহীন সমিতির খাস জমি বরাদ্দ পাবার অধিকার।
  • ভূমিহীন পরিবার কর্তৃক খাস জমির জন্য প্রদত্ত সেলামি/টাকা প্রদানের এবং খাজনা প্রদানের রশিদ পাবার অধিকার।
  • খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার ক্ষেত্রে কবুলিয়ত ফরম/স্বীকৃতি পত্রের এক কপি নিজের কাছে রাখার অধিকার।
  • জমি দখলে রাখার অধিকার এবং উত্তরাধীকারীগণের নাম পরিবর্তনের অধিকার।
  • খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তা বিনা রেজিস্ট্রেশন ফিতে নিজ নাম রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অধিকার।
  • খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তার সীমানা চিহ্নিত করে রাখার অধিকার।
  • যদি কোনো ব্যক্তি তার নিজ জমিতে হাস মুরগীর খামার বা দুগ্ধ খামার করে থাকেন তাহলে ঐ ব্যক্তির খামার সংলগ্ন খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।
  • বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মত্‌স খামার স্থাপনের জন্য সরকারী খাস পুকুর দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।
  • বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ, ফলের বাগান এবং রাবার বাগান করার জন্য খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।

লংঘনঃ

  • কোন জমি গুলি খাস জমি সে বিষয়ে না জানানো।
  • ভূমিহীন ব্যক্তিকে খাস জমি বরাদ্দ না দেওয়া।
  • ভুলক্রমে কোনো ব্যক্তির জমি খাস জমি হিসেবে গণ্য হলে তা বাতিল করার জন্য সুযোগ না দেওয়া।
  • খাস জমি সংক্রান্ত কোন আপত্তি থাকলে আপিলের সুযোগ না দেওয়া।
  • ভূমিহীনরা খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার জন্য দরখাস্ত দাখিলের জন্য  সময় না দেওয়া।
  • জেলা প্রশাসক কর্তৃক খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর ১ কপি পূনর্বাসন কার্ড প্রদান না করা।
  • যদি কোন ভুমিহীন সমিতি থাকে তাহলে ভুমিহীন সমিতিকে খাস জমি বন্দোবস্ত না দেওয়া।
  • ভূমিহীন পরিবার কর্তৃক খাস জমির জন্য প্রদত্ত সেলামি/টাকা প্রদানের এবং খাজনা প্রদানের রশিদ প্রদান না করা।
  • খাস জমি দখলে রাখতে না দেওয়া।
  • খাস জমিতে উত্তরাধীকারীগণের নাম পরিবর্তন করতে না দেওয়া।
  • খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তা বিনা রেজিষ্ট্রেশন ফিতে নিজ নাম রেজিষ্ট্রি করে দিতে অস্বীকার করা।
  • খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তার সীমানা চিহ্নিত করে রাখাতে না দেওয়া।

প্রতিকারঃ থানা খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির নিকট খাস জমি সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে কোনো সমস্যা দেখা গেলে লিখিত দরখাস্ত দাখিল করতে হবে।

কতদিনের মধ্যে?

সমস্যা সৃষ্টির তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে।

আপিলের সুযোগ আছে কি? 

 আছে। থানা খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির কোন সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে আপিল করা যাবে।

কোথায় আপিল করতে হবে?

জেলা প্রশাসকের নিকট।

কতদিনের মধ্যে?

১৫ দিনের মধ্যে

জেলা কমিটির কোন সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে আপিল করা যাবে কি?

যাবে।

কোথায় আপিল করতে হবে?

জাতীয় নির্বাহী কমিটির নিকট।

কতদিনের মধ্যে?

৩০ দিনের মধ্যে।

Check Also

আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতির জন্য দেওয়ানী কার্যবিধির ভাষ্য

দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা-১৪ (আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতি)