হাজতী আসামীর জামিনের জন্য একটি লিগ্যাল ড্রাফটিং
ড্রাফটিং এর বিষয়ঃ হাজতী আসামীর পক্ষে জামিনের জন্য একটি লিগ্যাল ড্রাফটিং সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
মোকাম, বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা। |
|||||||||
যে প্রসঙ্গেঃ ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৪৯৮ ধারা মোতাবেক।
এবং যে প্রসঙ্গেঃ এবং যে প্রসঙ্গেঃ ————– দরখাস্তকারী/আসামী। বনাম রাষ্ট্র পক্ষে বিজ্ঞ পি.পি. ————– অপর পক্ষ। |
|||||||||
বিষয়ঃ হাজতী আসামীর জন্য জামিনের প্রার্থনা।
উপরোক্ত মামলার দরখাস্তকারী / হাজতী আসামীর পক্ষে বিনীত নিবেদন এই যে, ১। দরখাস্তকারী আসামী সহজ, সরল, নিরীহ, শান্তি প্রিয়, আইন মান্যকারী লোক বটে। দরখাস্তকারী আসামী বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ও বাসিন্দা। তার নাম ঠিকানা সঠিক আছে। জামিন পেলে পলাতক হবে না। উপযুক্ত জামিনদার দেওয়া হবে। ২। যেহেতু, এজাহারকারী তার এজাহারে বর্ণনা করেন যে, গত ১৩/০১/২০১৯ইং তারিখ যাত্রাবাড়ী থানার নৈশ সি.সি নং-৬০/১০ তাং- ১৩/০১/২০১৯ইং এবং জিডি নং-২০০, তাং-১৩/০১/২০১৯ইং মূলে সঙ্গীয় ফোর্সসহ ডিউটি করাকালীন ১৪/০১/২০১৯ইং তারিখ ভোর আনুমানিক ০৫.১০ ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাকা রাস্তার উপর অবস্থান করা ইউসিবি ব্যাংকের সামনে দিয়ে উপরোক্ত আসামী ডান হাতে একটি বাজারের ব্যাগ নিয়ে হেটে যাওয়ার সময় তার গতিবিধি সন্দেহজনক হলে, বাদী তার নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা সহ তার হাতে থাকা ব্যাগের মধ্যে কি আছে এবং কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞাসা করেন। সে কোন সদুত্তর দিতে না পারায় বাদীর সন্দেহ আরো ঘনিভূত হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে উক্ত আসামী হঠাৎ দৌড়ে পালায়নের চেষ্টাকালে সঙ্গীয় ফোর্সদের সহায়তায় উক্ত আসামীকে আটক করেন এবং উপস্থিত সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে উক্ত আসামীর ডান হাত হতে (১) ১টি প্লাষ্টিকের সাদা এবং সবুজ রংয়ের বাজারের ব্যাগের ভিতরে ১টি কমলা ও হলুদ স্টাইপ দেওয়া কম্বল দ্বারা মোড়ানো ৪০ (চল্লিশ) বোতল ভারতীয় তৈরী ফেন্সিডিল, যার প্রত্যেকটির গায়ের লেভেলে ও কর্ক এর উপর PHENSEDYL NEW COUGH LINCTUS 100 ML লেখা আছে উদ্ধারপূর্বক উপস্থিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় ১৪/০১/২০১৯ইং তারিখ ০৫.৩০ ঘটিকার সময় জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন এবং জব্দ তালিকায় সাক্ষীদের স্বাক্ষর গ্রহন করেন। ফলে অত্র মামলার উদ্ভব ঘটেছে। ৩। যেহেতু, এজাহারকারী এজাহারের বর্ণনা মতে নৈশ সি.সি নং- ৬০/১০ উল্লেখ করেছে। যা অত্র মামলার বহু পুর্বের সি.সি। ঘটনাস্থল হতে দরখাস্তকারী আসামীকে আটক করে নাই বা আসামীর নিকট হতে কোন কিছুই উদ্ধারও করা হয় নাই। পুলিশ প্রকৃত আসামীদের ধরতে না পেরে সকাল বেলা রাজমিস্ত্রির কাজে যাওয়ার সময় দরখাস্তকারী পথচারী আসামীকে ধরে অত্র মিথ্যা মামলায় সম্পৃক্ত করেছে। দরখাস্তকারী আসামীর পক্ষে বিগত ১৪/১/২০১৯ ইং তারিখ নিম্ন আদালতে জামিনের প্রার্থনা করলে উক্ত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় নিম্নে বর্ণিত হেতুবাদের প্রেক্ষিতে অত্র জামিনের আবেদন করা হলো। হেতুবাদসমূহঃ ক) যেহেতু, দরখাস্তকারী হাজতী আসামী নির্দোষী, নিরপরাধী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রনোদিত বিধায় আসামী জামিন পাওয়ার হকদার। খ) যেহেতু, এজাহারে বর্ণিত আলামত দরখাস্তকারী আসামীর নিকট হতে বা দখল হতে উদ্ধার হয় নাই বিধায় দরখাস্তকারী/আসামী জামিন পাওয়ার হকদার। গ) যেহেতু, ঘটনাস্থলের কোন স্বাক্ষীর সম্মুখে আলামত জব্দ করা হয় নাই। প্রকৃত আসামীদের ফেলে যাওয়া আলামত দেখিয়ে অত্র পথচারী দরখাস্তকারী আসামীকে অত্র মামলায় সম্পৃক্ত করেছে বিধায় আসামী জামিনের প্রার্থনা করছেন। ঘ) যেহেতু, অত্র মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত শেষে অদ্যাবধি পর্যন্ত অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারে নাই। অতএব, মামলাটি সন্দেহজনক বিধায় আসামী সন্দেহের সুযোগে জামিন পাওয়ার হকদার। ঙ) যেহেতু, দরখাস্তকারী হাজতী আসামী বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ও বাসিন্দা। জামিনে মুক্তি পেলে পালানোর কোন সম্ভাবনা নাই। উপযুক্ত স্থানীয় জামিনদার দেওয়া হবে। চ) যেহেতু, দরখাস্তকারী হাজতী আসামী একজন দক্ষ রাজমিস্ত্রী। রাজের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার অভাবে তার সংসার অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতেছে বিধায় জামিনের প্রার্থনা করছেন। ছ) যেহেতু, মামলার ঘটনার বর্ননায় আসামী পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করে নাই, পালাই যাওয়া আসামীর ফেলে যাওয়া আলামত দিয়ে দরখাস্তকারী আসামীকে ফাসিয়ে দেওয়া হয়েছে বিধায় জামিন প্রার্থনা করছেন। জ) যেহেতু, দরখাস্তকারী হাজতী আসামী বিগত ১৪/০১/২০১৯ইং তারিখ হতে জেল হাজতে আবদ্ধ থাকায় ভীষনভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। জামিনে মুক্ত হয়ে চিকিৎসা নেওয়া একান্ত আবশ্যক। অন্যথায়, আসামীর জীবনের মারাত্মক পরিনতি ঘটতে পারে। ঝ) অপরাপর বক্তব্য সমূহ শুনানীকালে পেশ করা হবে। |
|||||||||
সেমতে, প্রার্থনা হুজুর আদালত দয়া প্রকাশে ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে দরখাস্তকারী/ আসামীর পক্ষে অত্র দরখাস্তখানা গ্রহন ও মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতের নথি তলব করে উভয় পক্ষকের শুনানী অন্তে আসামীকে স্থায়ী জামিনে মুক্তি দিয়ে বাধিত করতে মর্জি হয়।
এবং উক্ত আসামীর স্থায়ী জামিনের বিষয় শুনানী না হওয়া পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আসামীকে অর্ন্তবর্তীকালীন জামিনে মুক্তি দিয়ে সুবিচার করতে হুজুর আদালতের একান্ত মর্জি হয়। উক্তরূপ আদেশের জন্য দরখাস্তকারী চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। ইতি, তাং—। |
|||||||||
[gs-fb-comments]