Tuesday , December 30 2025
👁️ আজকের ভিউ: 1,366 | মোট ভিউ: 143,355
আয়কর প্রশিক্ষণমূলক গাইডলাইন ২০২৫ ২০২৬

আয়কর রিটার্ন কি?

আয়কর গাইডলাইন, ২০২৫-২০২৬ এর সূচীপত্রে ফিরে যেতে এখানে ক্লিক করুন।

রিটার্ন কি?

রিটার্ন হলো করদাতার আয়, ব্যয় এবং সম্পদের তথ্য আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছে জানানোর একটি ফরম।

রিটার্নে কি থাকে?

আপনার সব আয়ের বিবরণ যেমনঃ বেতন, ব্যবসা বা অন্য কোনো আয়ের উৎস। আপনার দেশে এবং বিদেশে থাকা সব সম্পদ ও দায়। কখনো কখনো আপনার জীবনযাপন সংক্রান্ত ব্যয়, যদি প্রযোজ্য হয়।

কীভাবে দিতে হয়?

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) যে ফরম নির্ধারণ করেছে, সেই ফরম ব্যবহার করে অনলাইন অথবা সরাসরি আয়কর অফিসে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। সারসংক্ষেপে, রিটার্ন হলো করদাতার আয় ও সম্পদের স্বচ্ছ এবং নিয়মিত তথ্য সরকারের কাছে জানানোর একটি উপায়।

রিটার্ন কারা দাখিল করবেন?

রিটার্ন দাখিলকারীদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

  • ক) যাদের করযোগ্য আয় রয়েছেঃ যেসব ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয় আইন অনুযায়ী করযোগ্য, তাদের রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক।
  • খ) যাদেরকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবেঃ আয় করযোগ্য হোক বা না হোক, কিছু বিশেষ ব্যক্তিকে আইন অনুযায়ী অবশ্যই রিটার্ন দাখিল করতে হয়।

করযোগ্য আয়ের ভিত্তিতে যাদেরকে রিটার্ন দাখিল করতে হবেঃ

  • ১) কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার (individual) আয় যদি বছরে ৩,৫০,০০০ টাকার বেশি হয়;
  • ২) মহিলা এবং ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে ৪,০০,০০০ টাকার বেশি হয়;
  • ৩) তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার আয় যদি বছরে ৪,৭৫,০০০ টাকার বেশি হয়;
  • ৪) গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে ৫,০০,০০০ টাকার বেশি হয়।
  • ৫) কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান/পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০ টাকা অধিক হইবে, তবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হইলে যেকোনো একজন এই সুবিধা ভোগ করিবেন;
  • ৬) বাংলাদেশে অনিবাসী (অনিবাসী বাংলাদেশী ব্যতীত) এইরূপ সকল করদাতার জন্য এই বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য হবে না।

যাদেরকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবেঃ

  • ১) করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করলে;
  • ২) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের পূর্ববর্তী তিন বছরের যে কোনো বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকে বা তার আয় করযোগ্য হয়ে থাকে;
  • ৩) কোম্পানি, কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী হলে;
  • ৪) ফার্ম, ফার্মের অংশীদার বা কোন ব্যক্তিসংঘ হলে;
  • ৫) কোনো ব্যবসায় নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদে বেতনভোগী কর্মী হলে;
  • ৬) গণকর্মচারী হলে;
  • ৭) কোন অনিবাসী যার বাংলাদেশে স্থায়ী স্থাপনা আছে;
  • ৮) কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য আয় থাকলে;
  • ৯) ধারা ২৬১ অনুসারে করদাতা হিসেবে নিবন্ধনযোগ্য কোনো ব্যক্তি;
  • ১০) করারোপযোগ্য আয় না থাকা সাপেক্ষে, ২০ (বিশ) লক্ষাধিক টাকার ঋণ গ্রহণে;
  • ১১) আমদানি নিবন্ধন সনদ বা রপ্তানি নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তিতে ও নবায়ন করতে;
  • ১২) সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য;
  • ১৩) সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার লাইসেন্স নবায়ন করতে;
  • ১৪) সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় জমি, বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রয় বা লিজ বা হস্তান্তর বা বায়নানামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে;
  • ১৫) চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, একচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্বপতি, সার্ভেয়ার হিসাবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসাবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ নবায়ন করতে;
  • ১৬) Muslim Marriages and Divorces (Registration) Act, 1974 (Act No. LII of 1974) এর অধীন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪০ নং আইন) এর অধীন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক ও Special Marriage Act, 1872 (Act No. III of 1872) এর অধীন রেজিস্ট্রার হিসাবে লাইসেন্স প্রাপ্তি বা নবায়ন করতে;
  • ১৭) ট্রেডবডি বা কোনো বাণিজ্যিক সংগঠনের সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • ১৮) স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসাবে লাইসেন্স নবায়নে;
  • ১৯) ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স, কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্স, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং লাইসেন্স ও বায়িং হাউজ নিবন্ধন প্রাপ্তি ও নবায়নে;
  • ২০) যেকোনো এলাকায় গ্যাসের বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তিতে;
  • ২১) সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তিতে;
  • ২২) লঞ্চ, স্টিমার, কৃষু ধরার ট্রলার, কার্গো, কোস্টার ও ডাম্ব বার্জসহ যেকোনো প্রকারের ভাড়ায় চালিত নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • ২৩) পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হইতে ইট উৎপাদনের অনুমতি প্রাপ্তি ও নবায়নে;
  • ২৪) সিটি কর্পোরেশন, জেলা সদর বা পৌরসভায় অবস্থিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু বা পোষ্য ভর্তিতে;
  • ২৫) কোম্পানির এজেন্সী বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • ২৬) আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • ২৭) আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খোলায়;
  • ২৮) ১০ (দশ) লক্ষাধিক টাকার মেয়াদী আমানত খোলায় ও বহাল রাখতে;
  • ২৯) ১০ (দশ) লক্ষাধিক টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে;
  • ৩০) পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে;
  • ৩১) ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক বা উৎপাদন কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানকারী পদমর্যাদায় কর্মরত ব্যক্তির বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে;
  • ৩২) স্বাভাবিক ব্যক্তি ব্যতীত অন্যান্য করদাতার ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে;
  • ৩৩) অ্যাডভাইজরি বা কনসাল্টেন্সি সার্ভিস, ক্যাটারিং সার্ভিস, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, জনবল সরবরাহ, নিরাপত্তা সেবা সরবরাহ বাবদ নিবাসী কর্তৃক কোনো কোম্পানি হইতে কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে;
  • ৩৪) বিমা কোম্পানির এজেন্সি সার্টিফিকেট নিবন্ধন বা নবায়নে;
  • ৩৫) দ্বি-চক্র বা ত্রি-চক্র মোটরযান ব্যতীত অনান্য মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নকালে;
  • ৩৬) এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত এনজিও বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি হইতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার অনুকূলে বিদেশি অনুদানের অর্থ ছাড় করতে;
  • ৩৭) ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়নে;
  • ৩৮) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এবং Societies Registration Act, 1860 (Act No. XXI of 1860) এর অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ লাভ ও নবায়ন এর ক্ষেত্রে;
  • ৩৯) পণ্য সরবরাহ, চুক্তি সম্পাদন বা সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে নিবাসী কর্তৃক টেন্ডার ডকুমেন্টস্ দাখিলকালে;
  • ৪০) পণ্য আমদানি বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিল অব এন্ট্রি দাখিলকালে;
  • ৪১) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা, সময় সময়, সরকার কর্তৃক গঠিত অনুরূপ কর্তৃপক্ষ অথবা সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমোদনের নিমিত্ত ভবন নির্মাণের নকশা দাখিলকালে;
  • ৪২) কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বাড়ি ভাড়া বা লিজ গ্রহণকালে বাড়ির মালিকের;
  • ৪৩) কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক পণ্য বা সেবা সরবরাহ গ্রহণকালে সরবরাহকারীর বা সেবা প্রদানকারীর;
  • ৪৪) হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মোটেল, কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসমূহের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নকালে;
  • ৪৫) সামাজিক অনুষ্ঠান, কর্পোরেট প্রোগ্রাম, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণসহ সমজাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠান হতে ভাড়া বা অন্য সেবা গ্রহণকালে সেবা গ্রহনকারীর।

রিটার্ন ফরম কোথায় পাওয়া যায়?

দেশের সকল আয়কর অফিসে রিটার্ন ফরম সহজলভ্য রাখা হয়েছে, যাতে করদাতারা সরাসরি গিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে পারেন। একজন করদাতা সারা বছর রিটার্ন ফরম সংগ্রহ করতে পারেন এবং এর জন্য কোনো মূল্য পরিশোধ করতে হয় না, অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত ওয়েবসাইট (nbr.gov.bd) থেকে ফরম ডাউনলোডের সুযোগ রাখা হয়েছে। যদি কোনো করদাতা মূল ফরমের পরিবর্তে সেটির ফটোকপি ব্যবহার করে রিটার্ন দাখিল করতে চান, তবে সেটিও আইনত গ্রহণযোগ্য হবে। তবে ২০২৫-২৬ কর বছর থেকে সরকার সকল ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। করদাতারা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে চাইলে সরাসরি https://etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারেন। যারা এক পাতার সহজ রিটার্ন ব্যবহার করার যোগ্য, তারা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এই সুবিধা নিতে পারেন। আপনি রিটার্ন ফরম সরকারি অফিস থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারেন অথবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ডাউনলোড করে নিতে পারেন, তবে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী সেই রিটার্নটি অনলাইনে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।

রিটার্ন দাখিলের সময়

স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের জন্য আয়বর্ষ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩০ নভেম্বর হলো রিটার্ন দাখিলের সর্বশেষ সময়সীমা, যা ‘ট্যাক্স ডে’ হিসেবে পরিচিত। এই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় করদাতাকে আয়কর আইনের ১৭৩ ধারা অনুযায়ী তার প্রদেয় কর পরিশোধ করতে হয়। যদি কোনো করদাতা অনিবার্য কারণে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দিতে না পারেন, তবে তাকে ওই নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বেই আয়কর কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করতে হবে। কমিশনার আবেদনটি বিবেচনা করে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা নির্দিষ্ট তারিখ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ (নব্বয়) দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে করদাতা তার বিনিয়োগের বিপরীতে কর রেয়াত (Tax Rebate) সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। নির্ধারিত সময়ের পর রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে করদাতাকে প্রতি মাসের জন্য ২% হারে অতিরিক্ত কর পরিশোধ করতে হতে পারে। যদি করদাতা প্রথমবারের মতো রিটার্ন দাখিল করেন, তবে তার জন্য আয়বর্ষ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩০ জুন পর্যন্ত সময় থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করা অনেকটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার খাতা জমা দেওয়ার মতো; সময়মতো জমা দিলে আপনি আপনার অর্জিত পূর্ণ নম্বর (যেমনঃ কর রেয়াত) পাবেন, কিন্তু দেরি করলে আপনার নম্বর কাটা যেতে পারে বা আপনাকে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হতে পারে।

রিটার্ন দাখিলের নির্দিষ্ট তারিখ পরবর্তীকালে রিটার্ন দাখিল

আইনের নির্দিষ্ট সময়সীমা বা ‘ট্যাক্স ডে’ (সাধারণত ৩০ নভেম্বর) পার হয়ে গেলেও একজন করদাতা রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। নির্ধারিত সময়ের পরে রিটার্ন জমা দিলে করদাতাকে আয়কর আইনের ১৭৪ ধারা অনুযায়ী কর গণনা ও পরিশোধ করতে হয়। এটি মূলত সময়মতো রিটার্ন না দেওয়ার ফলে আরোপিত একটি বিশেষ প্রক্রিয়া। ১৭৪ ধারা অনুযায়ী, নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর প্রতি মাসের বিলম্বের জন্য ২% হারে অতিরিক্ত কর বা সরল সুদ প্রদান করতে হয়। এই অতিরিক্ত কর সর্বোচ্চ ২৪ মাস পর্যন্ত গণনা করা হতে পারে। দেরি করে রিটার্ন জমা দেওয়ার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, করদাতা তার জীবন বীমা, সঞ্চয়পত্র বা অন্যান্য বিনিয়োগের বিপরীতে কোনো কর রেয়াত (Tax Rebate) সুবিধা পাবেন না। অর্থাৎ, তাকে রেয়াত ছাড়াই পূর্ণ কর পরিশোধ করতে হবে। স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা বিলম্বিত রিটার্নটি সংশ্লিষ্ট কর বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ‘স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে’ জমা দিতে পারবেন। তবে ৩০ জুনের পর জমা দিতে হলে তাকে ‘সাধারণ পদ্ধতিতে’ রিটার্ন দাখিল করতে হবে। দেরি করে রিটার্ন জমা দিলেও সরকারি পেনশন, গ্র্যাচুইটি, বৈধ পথে আসা রেমিট্যান্স এবং নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের মতো নির্দিষ্ট কিছু আয়ের ওপর কর অব্যাহতি সুবিধা বহাল থাকে। নির্ধারিত সময়ের পর রিটার্ন দাখিল করা অনেকটা ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ট্রেনে যাওয়ার মতো। আপনি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন ঠিকই, কিন্তু সেজন্য আপনাকে অতিরিক্ত মাশুল (২% জরিমানা) দিতে হবে এবং প্রথম ট্রেনের বিশেষ সুযোগ-সুবিধাগুলো (কর রেয়াত) আপনি হারাবেন। তাই আর্থিক ক্ষতি এড়াতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রিটার্ন জমা দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

আরও জানুন →

  • কোনও পোস্ট পাওয়া যায়নি।

সাম্প্রতিক প্রকাশিত ভিডিওসমূহ

আয়কর প্রশিক্ষণমূলক গাইডলাইন

আমাদের সেবাসমূহ

প্রয়োজনীয় সরকারি লিংক

📱 অ্যাপ ডাউনলোড করুন — দ্রুত

অ্যাপ ইন্সটল করে সবকিছু এক জায়গায় দেখুন।

Check Also

আয়কর প্রশিক্ষণমূলক গাইডলাইন ২০২৫ ২০২৬

আয়কর রিটার্ন কি?

মূল পাতায় ফিরে যান গাইডলাইনের সূচীপত্র আয়কর গাইডলাইন, ২০২৫-২০২৬ এর সূচীপত্রে ফিরে যেতে এখানে ক্লিক …

আপনার মূল্যবান মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Table of Contents

Index