Friday , April 26 2024

নারী অধিকার (পারিশ্রমিক বা মজুরী সংক্রান্ত), পর্ব-২

১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইন অনুযায়ী মজুরীর সংজ্ঞাঃ মজুরী বলতে ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের ২(৬) ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন শ্রমিককে তার চাকরির শর্ত পূরণ সাপেক্ষে, তার আচরণ, নিয়মিত কাজে উপস্থিতি, তার ভাল ব্যবহার এবং তার কাজের উপর ভিত্তি করে তাকে যে অর্থ প্রদান করা হয় তা মজুরী হিসাবে বিবেচিত হবে। এছাড়া যে কোন বোনাস বা তার চাকরির অবসানের কারণে তাকে যে  অর্থ দেয়া হয় তা মজুরী বলে বিবেচিত হবে।

তবে ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনে আরও কিছু বিষয়ের কথা বলা হয়েছে যেগুলো মজুরী বলে বিবেচিত হবে না৷ বিষয়গুলো হলঃ

(ক) আবাসিক সুবিধাসহ সরবরাহকৃত আলো, পানি বা চিকিত্সা সুবিধা এবং সরকার অন্যান্য যে বিষয়গুলো বাদ দিয়েছে এমন সুবিধার জন্য যে অর্থ প্রদান করা হয় তা মজুরী হিসাবে বিবেচিত হবে না;

(খ) মালিক পেনশন ফান্ড বা প্রভিডেন্ট ফান্ডে যে টাকা প্রদান করে তা মজুরী হিসেবে বিবেচিত হবে না;

(গ) যাতায়াত ভাতা বা যাতায়াত সুবিধা বাবাদ যে অর্থ প্রদান করা হয় তা মজুরী হিসেবে বিবেচিত হবে না;

(ঘ) চাকরির ধরনের উপর নির্ভর করে নিযুক্ত ব্যক্তির বিশেষ ব্যয় নির্বাহের জন্য যে অর্থ প্রদান করা হয় তা মজুরী হিসেবে বিবেচিত হবে না; এবং

(ঙ) ডিসচার্জ করার কারণে যে গ্রাচ্যুইটি প্রদান করা হয় তা মজুরী হিসাবে বিবেচিত হবে না।

[দেখুনঃ ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের ধারা ২(৬)]

মজুরী পরিশোধের সময়ঃ মজুরী কখন পরিশোধ করতে হবে সে ব্যপারে ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের  (৫) ধারায় বলা হয়েছে যে, যেসব কারখানায় বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১০০০ এর কম লোক কাজ করে সেই সব কারখানায়  বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে যে মেয়াদের জন্য মজুরী প্রাপ্য তার শেষ দিনে মজুরী পরিশোধ করতে হবে অথবা শেষ দিন থেকে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যেই  মজুরী পরিশোধ করতে হবে। (দেখুনঃ ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের ধারা-৫)

রেলওয়ে বা অন্যান্য কারখানায় বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে যে মজুরী মেয়াদের জন্য মজুরী প্রাপ্য তার শেষ দিনে মজুরী পরিশোধ করতে হবে অথবা শেষ দিন থেকে  পরবর্তী দশ দিনের মধ্যেই  মজুরী পরিশোধ করতে হবে । মজুরী অবশ্যই কার্য দিবসে অর্থাত্‍ বন্ধের দিন ছাড়া কারখানা  বা শিল্প প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে পরিশোধ করতে হবে; এই আইনের (৬) ধারা অনুযায়ী  প্রচলিত মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে। (দেখুনঃ ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের ধারা-৬)। আর যদি কেউ এই বিধান লংঘন করে তবে ১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের ২০(১) ধারায় অনধিক ৫০০/- টাকা পর্যন্ত অথবা অনধিক ৬ মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন।

যদি মালিক বা তার পক্ষ থেকে কোন ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অবসান করা হয় তবে ঐ ব্যক্তির  প্রাপ্য মজুরী, যে দিন তাকে চাকরি থেকে অপসারন করা হয়েছে সেদিন থেকে পরবর্তী দ্বিতীয় দিন পার হওয়ার আগেই অর্থাত্‍, যে দিন তাকে চাকরি থেকে অপসারন করা হয়েছে সেদিন থেকে পরবর্তী দুই দিনের মধ্যেই তার মজুরী পরিশোধ করে দিতে হবে। এই আইনে একটি ব্যতিক্রম আছে সেটি হল কারখানা ছাড়া যে কোন রেলওয়েতে কর্মরত ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে সরকার বিশেষ বা সাধারণ আদেশ জারী করে এই ধারার আওতা থেকে রেহাই দিতে পারেন।

Check Also

আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতির জন্য দেওয়ানী কার্যবিধির ভাষ্য

দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা-১৪ (আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতি)

আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতির জন্য দেওয়ানী কার্যবিধির ভাষ্য

দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা-১৩ (আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রন্তুতি)