Tuesday , June 3 2025

যৌতুক দাবি করলে কি করবেন? (পর্ব-০২)

যৌতুক দাবি করার জন্য দন্ডঃ যৌতুক নিরোধ আইন, ১৯৮০ এর ধারা ৪ এ বলা হয়েছে, এই আইনের কার্যকারিতা আরম্ভ হবার পর যদি কোন ব্যক্তি ক্ষেত্রমতে বর বা কনের পিতা-মাতা বা অভিভাবকের নিকট হইতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন যৌতুক দাবি করে, তাহা হইলে সে ৫ বছর মেয়াদ পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য এবং এক বছর মেয়াদের কম নয়, কারাদন্ডে বা জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে৷

ব্যাখ্যাঃ কোন এক পক্ষ যৌতুক দাবি করেছিল এরকম অপরাধ প্রমানিত হলেই অপরাধীকে দন্ড দেয়া যাবে অর্থাত্‍ শুধুমাত্র যৌতুক দাবি করা এই ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেবার জন্য যথেষ্ট তবে, যৌতুক দাবি করার যথেষ্ট প্রমাণ থাকা আবশ্যক৷ এই দাবি মৌখিক বা লিখিতভাবে হতে পারে৷

বর্তমান সমাজে বিয়ের পর যৌতুক দাবি করে স্ত্রীর উপর কিভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে তার নির্দিষ্ট দৈনিক খবরের কাগজেও পাওয়া যায়৷ মেয়ের বাবা অক্ষম তারপরও মেয়ের সুখের জন্য নিজের সবকিছু বিক্রি করে বরের দাবি পূরণ করছেন৷ অথচ তিনি জানেন না যে, যৌতুক দিয়ে তিনিও সমান অপরাধ করছেন৷

বিস্তারিত আলোচনায় যৌতুকের কয়েকটি উপাদান পাওয়া যায় যেমনঃ

  • বিয়ের পক্ষগণ কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত যৌতুক আদান-প্রদান বা আদান-প্রদানের সম্মতি থাকতে হবে৷
  • বিবাহের সময়ে বা পূ্র্বে বা পরে যে কোন সময়ে ইহা প্রদান বা প্রদানের সম্মতি দিতে হবে৷
  • পক্ষদের মধ্যে যৌতুক হিসেবে দেয়া-নেয়াটি  বিয়ে বজায় রাখার শর্তে হতে হবে৷

আইন প্রণেতাগণ তাই সতর্কতা গ্রহণ করেছেন যে, বিয়ের সময় বা আগে যৌতুক গ্রহণ বা দেওয়া বা তাতে সাহায্য করা শুধু অপরাধ নয় বরং বিয়ের পরে যৌতুক দাবি করাও অপরাধ৷ [তথ্যসূত্রঃ আবুল বাশার হাওলাদার বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য, ৪৬ ডি.এল.আর (১৯৯৪) ১৬৯]

সংশ্লিষ্ট প্রতিকারঃ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান প্রভৃতি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বা সামাজিক বিধানের আওতায় যৌতুক তথা বিয়ের সময় উভয় পক্ষের মধ্যে অর্থ কিংবা মূল্যবান সম্পদ আদান প্রদানের প্রথা থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশের প্রচলিত যৌতুক নিরোধ আইনে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত। ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৮ নং ধারায় অপরাধটি আপোষযোগ্য ছিল না। কিন্তু, এই আইনের অধীনে দায়ের করা অধিকাংশ মামলায় পক্ষদের মধ্যে ঘনিষ্ট সর্ম্পক থাকে তাই মামলা আপোষের জন্য পক্ষদের মধ্যে আগ্রহও বেশী দেখা যায়। সময়ের এই প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করেই ১৯৮৬ সালের ২৬ নং আইনের দ্বারা অপরাধটি আপোষযোগ্য করা হয়।

আপোষের সুযোগ থাকায় এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি দু’ধরণের  প্রতিকারের জন্য উদ্যোগ নিতে পারেন।

  • সালিশের মাধ্যমে আপোষ মীমাংসা এবং
  • আদালতে মামলা দায়েরের মাধ্যমে।

<<< ১ম পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুন ৩য় পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুন >>>

Check Also

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এম.সি.কিউ পরীক্ষার প্রশ্ন, ২০১৩ (চূড়ান্ত প্রস্তুতির জন্য)

বার কাউন্সিল এম.সি.কিউ পরীক্ষার প্রশ্ন ব্যাংক বার কাউন্সিল পরীক্ষা, ২০১৩ [maxbutton id=”1″ url=”https://legalstudy24.com/bangladesh-bar-council-mcq-final-exam-2013/” text=”আবার চেষ্টা …

হাজতী আসামীর জামিনের জন্য একটি লিগ্যাল ড্রাফটিং

ড্রাফটিং এর বিষয়ঃ হাজতী আসামীর পক্ষে জামিনের জন্য একটি লিগ্যাল ড্রাফটিং সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। …